দুর্ব্যবহারের অভিযোগে অর্থ বিভাগের অন্যতম যুগ্মসচিব নাদিরা সুলতানার শাস্তির দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন কর্মচারীরা।
সচিবালয় ৬ নম্বর ভবনের সামনে বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা, তবে পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের সরিয়ে দেন।
অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব নাদিরা সুলতানার বিরুদ্ধে সচিবালয়ের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা উসকে দেয়া ও কর্মচারীদের সঙ্গে অমানবিক, অসৌজন্যমূলক ও আক্রমণাত্মক আচরণের অভিযোগ তুলে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ এ বিক্ষোভের আয়োজন করে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এসব কর্মচারী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে হট্টগোল করেন। তারা নাদিরা সুলতানার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সিনিয়র সচিবের কাছে লিখিত আবেদন দেন।
বিক্ষোভ করা কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সহকারী সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব ও উপসচিব পদে ক্যাডার বহির্ভূত কর্মচারীদের নির্দিষ্ট হারে পদোন্নতি পাওয়ার কোটা রয়েছে, কিন্তু ক্যাডার-বহির্ভূত কর্মচারীরা বিগত দিনে সেটা পরিপূর্ণভাবে পাননি। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দাবি জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এরই মধ্যে কমিটির অন্য সদস্যরা এ সমস্যা সমাধানে একমত পোষণ করে একটি প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেন, কিন্তু নাদিরা সুলতানা প্রাথমিক অবস্থায় স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানান।
তারা আরও বলেন, মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জিয়াউর রহমানসহ কয়েকজন কর্মচারী নাদিরা সুলতানার স্বাক্ষর আনতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে যান। তখন নাদিরা জিয়াউরের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করলে একপর্যায়ে জিয়া অজ্ঞান হয়ে যান, এমন অভিযোগ আসে।
জিয়াকে প্রথমে সচিবালয়ের ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে রাজধানীর কর্মচারী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়।
যুগ্ম সচিবের ‘খারাপ আচরণের’ খবর ছড়িয়ে পড়লে সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীরা মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বারান্দায় গিয়ে ওই যুগ্মসচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। একই ধারাবাহিকতায় আজও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
যদিও কর্মচারীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এপিডি ওবায়দুর রহমান তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নিয়ে মঙ্গলবারই ওই প্রতিবেদনে নাদিরা সুলতানাকে স্বাক্ষরের নির্দেশ দেন। এরপর সন্ধ্যায় নাদিরা স্বাক্ষর দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুগ্মসচিব নাদিরা সুলতানা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি।